খেলার মাঠ নেই, কোচ নেই, অনুশীলনও নেই। তবু এটা খেলা! হা এটাই হচ্ছে বর্তমান সময়ের ভার্চুয়াল জগতের তরুণদের জনপ্রিয় খেলা। মাঠে যত পেশাদার খেলোয়াড় আছে তার চেয়ে কয়েক গুণ খেলোয়াড় ই-স্পোর্টসের। বিশ্বজুড়ে মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারে তাঁরা ব্যস্ত পাবজি, ফ্রিফায়ারসহ হাজারো গেমসে। অনেকেই মজার ছলে শুরু হওয়া এমন অনলাইন খেলাগুলোকে বড় স্বীকৃতি দিয়েছে চীনে হতে যাওয়া ২০২২ হাংচৌ এশিয়ান গেমস। যা বিশ্বে প্রথম কোন টুর্নামেন্ট এখানে প্রায় কয়েকটি দেশের প্লেয়াররা অংশগ্রহণ করবে। শুনে অবাক হচ্ছেন? এটাই সত্যি।
প্রথমবার আনুষ্ঠানিকভাবে হাংচৌতে অনলাইনের আটটি খেলার খেলোয়াড়রা লড়বেন ২৪টি পদকের জন্য। অর্থাৎ ক্রিকেট, ফুটবল, সাঁতারে একটি পদক পেলে যে মর্যাদা, ই-স্পোর্টসের আটটি ইভেন্টও তা-ই।
হাংচৌতে পদকের লড়াই হবে পাবজি, ডোটা-টু, হার্থস্টোন, লীগ অব লিজেন্ডস, ফিফা, স্ট্রিট ফাইটার ভি, অ্যারেনা অব ভেলর এবং ড্রিম অব দ্য থ্রি কিংডমস টু—এই আট ইভেন্টে। গত এশিয়ান গেমসে পদকহীন বাংলাদেশও কাজে লাগতে চায় সুযোগটা। তাই এই সুযোগটা হাতছাড়া করতে চায়না বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) সর্বশেষ নির্বাহী সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে ই-স্পোর্টসের তিনটি ইভেন্টে অংশ নেওয়ার।
বাস্তবতা হচ্ছে, বিওএর কর্তাদের এসব খেলা নিয়ে অনেকের ধারণা নেই। তাই বাংলাদেশে ই-স্পোর্টসের অন্যতম পথপ্রদর্শক শেখ রেজাউর রহমান রনি ও খেলোয়াড় রাফসান আগার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা। দিন চারেক আগে হওয়া আলোচনায় প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে ফিফা, হার্থস্টোনের সঙ্গে আরেকটি গেমসে অংশ নেওয়ার। হ্যাঁ সত্যি জেনেছেন বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহণ করছে এ তরুণরা।
এ নিয়ে বিওএর ডিরেক্টর জেনারেল ফখরুদ্দিন হায়দার জানালেন, ‘সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে আমাদের। বাংলাদেশের প্রতিভাবান তরুণরা গণিত অলিম্পিয়াডে পদক জিতছে। অনলাইন গেমসেও পিছিয়ে নেই আমরা। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি হাংচৌ এশিয়ান গেমসে তিনটি ইভেন্টে অংশ নেওয়ার। মার্চে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করে ও কমিটি গঠন করে খেলোয়াড় বাছাই করব আমরা। ছয়জন খেলোয়াড় সুযোগ পাবে হাংচৌতে। তারা ভালো করলে ভবিষ্যতে সংখ্যাটা আরো দ্বিগুন বাড়তে পারে প্রাথমিকভাবে তিনি একথা সংবাদমাধ্যমকে পরিষ্কার করেন।
শেখ রেজাউর রহমান রনি, রাফসান আগারা চান পাবজিতেও বাংলাদেশের পতাকা বহন করতে। তবে খানিক বিপত্তি দেখা দিয়েছে, আদালতের বাধা আছে এতে। এই ভিডিও গেমসটি মানসিক ক্ষতির কারণ বলে গত বছর আগস্টে বাংলাদেশ সহ আরো বেশ কয়েকটি দেশে এই গেমটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে এশিয়ান গেমসের ভার্সনটা আলাদা হওয়ায় আদালতে এ নিয়ে আপিল করতে চাইলেন রনি, ‘নৃশংস মৃত্যুর ব্যাপারটা এশিয়ান গেমস ভার্সনে নেই। আমরা এটা আদালতকে বোঝাতে চাইব। যদি অনুমতি পাই তাহলে পাবজিতে পদকের স্বপ্ন দেখতেই পারি। এই খেলায় অনেক ভালো খেলোয়াড় আছে আমাদের। অনুমতি না পেলে অন্য ইভেন্টে অংশ নেব। ’
দুবাইয়ে হওয়া গত ২০২০ পাবজি মোবাইলের বিশ্বকাপ খ্যাত ‘পিএম-এ সিজন জিরো’তে এক লাখ ২০ হাজার দলের মধ্যে বাংলাদেশ জায়গা করে নিয়েছিল সেরা ১৬-তে। বাবা যায় বাংলার তরুণরা কতটুকু এগিয়ে রয়েছে। এ ওয়ান ই-স্পোর্টস’ নামের সেই দলের প্রতিনিধিত্ব করেন কাজী আরাফাত হোসেন, হুসেইন আল শাকিল, নাওমান আল রাফিদ, আবু হাসনাত আলভি, সৈকত রহমান ও হাসানুজ্জামান অভি।
এশিয়ান গেমস খেলার সুযোগ নিয়ে শিহরিত কাজী আরাফাত হোসেন, ‘অনলাইন গেমস শুধু শিল্প নয়, একটা খেলা। এর স্বীকৃতি দিল এশিয়ান গেমস। আমরা কৃতজ্ঞ। হাংচৌ গেমসের জন্য বাছাই পর্বে আশা করছি আমাদের দলের কেউ না কেউ সুযোগ পাবে।
প্রতি ঘন্টার ডেইলি সিলেট 24 ডট কম এন নিউজ পেতে এখানে ক্লিক করুন
[table id=5 /]